পাঁচ বছরের ছোট সোনামণি হায়াত। আজ সে অনেক খুশি। কেননা আজ তারা দাদুবাড়ি যাচ্ছে। এবারের ঈদ তারা সেখানেই করবে। আম্মু বলেছে, সে যখন ছোট ছিল তখন নাকি তারা একবার দাদুবাড়ি ঈদ করেছিল। তবে সে কথা হায়াতের মনে নেই।

হায়াতের খুশির পরিমাণটা দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে তারই সমবয়সী চাচাতো বোন আয়াতের কথা চিন্তা করে। আয়াতের সাথে হায়াতের খুব মিল।
দাদুবাড়ি গিয়েই সে পুতুল খেলবে। তারপর তারা দুজন তাদের হাড়িপাতিল গুলো দিয়ে খেলবে, রান্না করবে, একজন আরেকজনকে দাওয়াত দিবে। অনেক জায়গায় ঘুরতে যাবে তারা। অনেক মজা হবে।
ঢাকা থেকে খুলনা গামী বাসে জানালার পাশে বসে এসব চিন্তা করছে হায়াত। জানালা দিয়ে আসা ঠান্ডা শীতল বাতাসে একসময় সে ঘুমিয়ে গেল।
হঠাৎ প্রচন্ড এক আওয়াজ ও মানুষের চিৎকার শুনে হায়াতের ঘুম ভাঙলো।আম্মু তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। পাশে আরেকটি বাস তাদের বাসের সাথে লাগানো, জানালার কাচঁ ভাঙা। সামনে কিছু মানুষের গায়ে রক্তের ফোঁটা। সবাই হুড়োহুড়ি করছে। কিছু মানুষ নিচে পড়ে আছে। তাদের মধ্যে তার বাবাও আছে।একজন অপরিচিত আঙ্কেল তার বাবাকে ধরে উঠানোর চেষ্টা করছে।আম্মু চিৎকার করে বাবাকে ডাকছে। কিন্তু বাবা কোনো কথা বলছে না। একদম নিরব, নিস্তেজ তার বাবা।
তার বাবা কথা বলছে না কেন?

বাবা মা সহ প্রথম বারের মতো দাদুবাড়ি যাচ্ছিল হায়াত। কত খুশি ছিল সে। তার এই খুশি যে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হবে না তাকি সে জানতো?

শুধুমাত্র অসাবধানতার কারণে এভাবেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে কত হায়াতের খুশি। সবাই সাবধানতার সাথে, ধীরে সুস্থে যাতায়াত করুন, প্রিয়জনদের সাথে ঈদ উদযাপন করুন। সবার ঈদ যাত্রা নিরাপদ হোক। ঈদ মোবারক।

লেখিকা: ফাতেমা তুজ জোহরা লাবণ্য
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ।